খাস জমি দখল আইন সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন

আমরা সাধারণত খাস জমি যে যেভাবে পারি সেভাবে দখল করার চেষ্টা করি।কিন্তু আসলে খাস জমি দখল করার অবশ্যই একটি নিয়ম রয়েছে। আমরা মনে করি যে জোর যার মুল্লুক তার। জোর করে দখল করে রাখি বা নিজের আওতায় রেখে দেই খাস জমি সমূহ। কিন্তু এভাবে খাজমি গুলি দখল করার কোন আইন নেই বাংলাদেশে। খাস জমি দখল বা ক্ষার জমি বন্দোবস্ত পাওয়ার জন্য আমরা সরকারের কাছে আবেদন জানাতে পারি। এবং সেই আবেদন মোতাবেক সরকার যাদেরকে ফাজলামি বন্দোবস্ত দেওয়ার উপযুক্ত মনে করেন তাদেরকে সেই সকল জমিগুলো বন্দোবস্ত দিতে পারে।

এটি হলো অসাধারণ নিয়ম বা আইন। কিন্তু আমরা আরও বিস্তারিতভাবে দেখব যে খাস জমি কিভাবে দখলে রাখা যায় বা সরকারের কাছ থেকে বৈধভাবে আইনিভাবে খার জমিগুলো কিভাবে দখল নেওয়া যেতে পারে। তবে এটি অবশ্যই ঠিক যে কোন একটা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য এই জমিগুলো সরকারের কাছ থেকে দখল নেওয়া যেতে পারে কিন্তু সারা জীবনের জন্য বা এককালীন এই জমিগুলো কখনোই সরকারের কাছ থেকে নেওয়া যাবে না।

এই কথাগুলো আমরা সাধারণভাবে বুঝে থাকি কিন্তু তারপরেও আইনের কথায় কি বলে সে বিষয়গুলি আমরা এখন দেখে নিতে পারব। তাহলে চলুন বিস্তারিতভাবে দেখে নিয়ে যে খাজ জমি কিভাবে দখলে নেওয়া যায় বা কিভাবে তখন করে রাখা যায় তার বৈধ কোন আইন রয়েছে কিনা। চলুন তাহলে দেখে নেওয়া যাক। দেখা যায় ১৯৫০ সালের আইন অনুযায়ী পরবর্তীকালে সবচেয়ে বেশি পরিমাণ আর জমি অর্জন হয়। এছাড়াও বয়স ত্রিশমি অধিগ্রহণ উদ্বৃত্ত জমি, অধিগ্রহণ উদ্বৃত্ত জমি মালিকানা বিহীন জমি ও পরবর্তী সময়ে সিলিং উদ্বৃত্ত জমি হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছিল।

প্রতিটি মৌজার ১ নং খতিয়ানে এই খাজ জমিগুলির বিবরণ লিপিবদ্ধ করা হয়। আর এই খারজামের বিবরণে মালিকের নামের জায়গায় বাংলাদেশ সরকারের নাম লেখা থাকে। তবে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে জেলা প্রশাসক কথাটি লেখা হয়ে থাকে। আর জমির তথ্যগুলি জেলা রেকর্ডরুম উপজেলা ভূমি অফিস এবং ইউনিয়ন ভূমি অফিসে ও এ সকল কাজ জমির তথ্য সংরক্ষণ করা হয়।

যে কেউ এসব তথ্যগুলির জানার অধিকার রয়েছে। ১৯৯৭ সালের সংশোধিত কৃষি জমি ব্যবস্থাপনা ও বন্দোবস্ত নীতিমালা অনুযায়ী দেশের সকল মেট্রোপলিটন এলাকা সকল পৌর এলাকা এবং সকল জেলা উপজেলা সদর এলাকা ভুক্ত সকল প্রকার জমি কে অকৃষি জমি এবং অন্য সকল এলাকার জমিকে কৃষি জমি হিসেবে হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। কৃষি জমিগুলো অর্থাৎ কৃষি কাজ জমি গুলো বাংলাদেশের ভূমিহীনদের মাঝে বিতরণ করার বিধান রয়েছে। এখন আগে জানতে হবে যে ভূমিহীন কারা। যে পরিবারগুলি কৃষির ওপর নির্ভর কিন্তু তাদের বসতবাড়িসহ অন্যান্য কোন জমি নেই অর্থাৎ কৃষিকাজের যোগ্য কোন জমি নাই এবং বসতভিটাও নেই সেই সব পরিবারকে ভূমিহীন পরিবার বলে আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে।

এছাড়াও আবার কিছু পরিবার রয়েছে যে তাদের শুধুমাত্র বসতভিটা রয়েছে কিন্তু কৃষির জন্য অন্যান্য কোন জমি নাই কিন্তু সেই পরিবার আবার কৃষির ওপর নির্ভরশীল সেই পরিবারকে ভূমিহীন পরিবার হিসেবে গণ্য করা যায়। তাহলে এই সকল ভূমিহীন পরিবারদের মধ্যে কৃষি খাস জমি বন্দোবস্ত দেওয়া হয়। তাহলে আমরা দেখলাম যে যেকোনো জমি আমরা জবরদখল করে রাখতে পারব না। সরকার প্রত্যেকটি উপজেলায় ভূমিহীনদের তালিকা করে থাকেন এবং সেই তালিকা অনুযায়ী প্রত্যেক পরিবারকে তাদের কৃষি জমি অর্থাৎ কৃষিকাজ জমিগুলি বন্দোবস্ত দেওয়ার ব্যবস্থা করে থাকেন।

কিন্তু দেখা যায় যে একটি উপজেলায় অনেক ধরনের বা অনেকগুলি পরিবার ভূমিহীন থাকে কিন্তু সেই পরিমাণ জমি না থাকার কারণে সকলকে জমি দিতে পারেনা। তখন সরকারের কর্তা ব্যক্তিরা দেখে থাকেন কোন পরিবার গুলি অগ্রাধিকার হিসাবে আগে জমি বন্দোবস্ত পেতে পারে তাদেরকেই দেওয়া হয়ে থাকে। এভাবে একটি অঞ্চলের বা একটি উপজেলার খাস জমিগুলো বিতরণ হয়ে থাকে ভূমিহীনদের মাঝে একেবারে বিনামূল্যে।