জমি খারিজ ফি

জমি ক্রয় করার পর অর্থাৎ জমি বিক্রয় এর কাছ থেকে দলিল রেজিস্ট্রি হবার পর আমাদেরকে অবশ্যই নামজারি করতে হয়। নামজারি অর্থাৎ খারিজ না করলে জমির মালিক বা পূর্ণ মালিকানা হওয়া সম্ভব নয়। জমি যতই নিজের দখলে থাকুক না কেন উত্তরাধিকার সূত্র পাওয়াই হোক আর ক্রয় কি তোর জমিই হোক সে জমি নিজের অধীনে আসার পর অবশ্যই নামজারি করে নিতে হয়।

নামজারি হল জমি নিজের অধীনে থাকার বা নিজের নামে থাকার একটি প্রমাণ। জমি ক্রয় করার পর যদি সে জমি খারিজ করা না হয় তাহলে ভবিষ্যৎ বংশধরের রাত সেই জমির হতে অবশ্যই বঞ্চিত হতে পারে। এই কারণে আমাদের অবশ্যই জমি ক্রয় করার পর সেই জমি নামধারী করে নিতে হয় বা খারিজ করে নিতে হয়।

আমরা অনেক সময় দেখে থাকি যে বা এরকম ধরনের কথা শুনে থাকি যে ঘোড়া কেনার সামর্থ্য আছে কিন্তু ঘোড়ার চাবুক কেনার সামর্থ্য হয় না। সেরকমভাবে আমরা অনেক ক্ষেত্রেই দেখে থাকি যে জমি ক্রয় করার পর সেই জমি খারিজ করার অর্থ অনেক জনের কাছেই থাকে না। কিন্তু আমরা যদি নিজেরা সরাসরি অফিসের মাধ্যমে যোগাযোগ করে জমির খারিজ করে নিতে চাই তাহলে খুব বেশি অর্থ লাগে বলে মনে হয় না। এখানে শুধুমাত্র সরকার নির্ধারিত ফি জমা দিয়েই আমরা জমির নামজারি করে নিতে পারি। কিন্তু আমরা যদি বিভিন্ন রকম দালালের মাধ্যমে নাম জারি করাতে চাই তাহলে অনেক অর্থের প্রয়োজন হয়।

কারণ যে দালাল যত পারে গ্রাহকের কাছ থেকে অর্থাৎ জমির মালিকের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। কারণ তারা তো আর কোন অফিসের নির্ধারিত কর্মকর্তা কর্মচারী নয়। তারা যেভাবে পারে যতটুকুন পারে জমির মালিকের কাছ থেকে সে সকল অর্থ আদায় করে নেয়। অর্থাৎ সরকারি তিনগুণ চারগুণ পাঁচ গুণ বা এর চাইতে বেশি অর্থ কখনো কখনো তারা কায়দা করে বিভিন্ন বেকায়দায় ফেলে নিতে পারে।

তাই আমাদের উচিত হবে যে ভিন্ন পথে বা বাকা লাইনে জমির খারিজের বিষয় চিন্তা না করে সরাসরি আবেদনের মাধ্যমে অর্থাৎ সহকারী কমিশনার ভূমি এর মাধ্যমে আবেদন করে আমরা নামজারি করতে পারি। এতে আপনার অবশ্যই কাজ করার অভিজ্ঞতা বাড়বে এবং বিষয়টি সঠিকভাবে সম্পন্ন হবে।

আপনার জমির কাগজপত্রে যদি কোন সমস্যা থেকে থাকে সেটিও তাদের মাধ্যমে ঠিক করে নিতে পারবেন। এজন্য আপনি অবশ্যই দালালের মাধ্যমে না গিয়ে নিজে নিজেই সরাসরি ভূমি অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ করে নামজারি বা জমি খারিজ করতে পারবেন। তবে আবার বর্তমানে অর্থাৎ ২০২২ সালের পহেলা অক্টোবর থেকে ভূমি অফিসের বিভিন্ন সেবা গুলি অনলাইনে দেওয়া হচ্ছে।

অনলাইনে সেবাগুলির মধ্যে অবশ্য নামজারির বিষয়টিও রয়েছে। তাই আপনি চাইলে ঘরে বসেই আপনার মোবাইল সেটের মাধ্যমে অথবা ল্যাপটপ কম্পিউটারের মাধ্যমে ভূমি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে ঢুকে আপনাকে আবেদন করতে হবে নামজারির জন্য। এবং এক্ষেত্রে আপনার সরকারি জেফসি সেটি অবশ্যই অনলাইনের মাধ্যমেই পেমেন্ট করতে হবে।

এতে আপনার প্রতারণা হওয়ার সম্ভাবনা একেবারেই নেই। তাই আপনি দালালের মাধ্যমে না গিয়ে বর্তমানে নিজে অনলাইনে আবেদন করে নামজারির করতে পারবেন এবং আবেদন করার পর আপনার আবেদনটি কি অবস্থায় রয়েছে সেটির ট্রাকিং করে অর্থাৎ আবেদন পত্রটি ট্রেকিং করে দেখে নিতে পারবেন। তাই আপনার আর কোন সমস্যা থাকবে না।

তাই এখন আমরা দেখে নিতে পারি যে আবেদন করার ফি কত বা আপনার জমি খারিজ করতে কত টাকা ব্যয় হতে পারে। নামজারির খরচ চারটি ভাগে বিভক্ত। অর্থাৎ চারটি ভাগের টাকা আলাদা আলাদা ভাবে মোট কত টাকা হয় সেটি আপনাদেরকে এখন আমরা দেখিয়ে দেবো। এবং এই টাকাগুলোর বাইরে আপনার কোন টাকা পয়সা লাগবে না।

প্রথমে আবেদন পত্রের সাথে আমাদের কোর্ট ফি বাবদ ২০ টাকা ৫০ টাকার নোটিশ জারির ফি রেকর্ড সংশোধন ফি ১০০০ টাকা খতিয়ান ১০০ টাকা এভাবে জমি খারিজের বা নামজারির সর্বমোট ফি হলো ১১৭০ টাকা। তাহলে জমি খারিজের সর্বমোট খরচের পরিমাণ আপনারা আমাদের এখান থেকে জেনে নিলেন।