খাস জমি লিজ নেওয়ার নিয়ম

আমরা জানি যে আমাদের দেশের প্রায় সকল জমিরই কেউ না কেউ মালিক রয়েছে। কিন্তু সকল জমির মালিক রয়েছে একথাও ঠিক নয়। কোন কোন জমির কোন ব্যক্তিগত মালিকানা এবং কোন সংস্থা ও মালিকানা দাবি করে না বা সে সকল জমির কোন মালিকানা নেই এ সকল জমিকেই সাধারণত খাস জমি বলা হয়ে থাকে। খাস কথাটির আভিধানিক অর্থ হলো নিজ বা আপন। মুঘল আমলে মুঘল সম্রাট এর আওতাধীন জমিগুলো রাজস্ব আদায় করার জন্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র এলাকায় বা পরগণায় ভাগ করা হতো।

কিন্তু এসব পরগনার মধ্যে বা মৌজার মধ্যে কিছু জমি সম্রাট নিজের জন্য রেখে দিত কাউকে বন্দোবস্ত দেওয়া হত না। এই নিজের জন্য রাখা জমিকে খাস সম্পত্তি বলা হত। সম্রাটের নিজের খরচ চালানোর জন্য এই সকল জমি নিজের নামে রাখতে বলেই সেটি খাস সম্পত্তি হিসেবে পরিচিত ছিল। এবং সেখান থেকেই খাস কথাটির বা খাস সম্পত্তি বা খাস জমির উদ্ভব হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। বর্তমানে প্রতিটি মজার এক নং খতিয়ানের খাস সম্পত্তিগুলো লিপিবদ্ধ করা থাকে। খাস সম্পত্তির খতিয়ানে জমির মালিকানার জায়গায় বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে জেলা প্রশাসক কথাটি উল্লেখ থাকে।

খাস সম্পত্তি সাধারণত দুই প্রকারের রয়েছে। কিছু সম্পত্তি কৃষিযোগ্য বা কৃষি জমি এবং বাকি কাজ সম্পত্তি গুলো অকৃতির জমি হিসেবে শ্রেণীবিভাগ শ্রেণীবিন্যাস করা হয়েছে। খাস কৃষি জমিগুলো বিনামূল্যে ভূমিহীন পরিবারের মাঝে বিতরণ করা হয়। ভূমিহীন তারা যারা বা যাদের পরিবারের কোনো বছরভিটা নেই এবং কৃষির ওপর নির্ভরশীল সেইসব পরিবারকে ভূমিহীন বলা হয়ে থাকে। আবার যে সকল পরিবারের দশ শতাংশ নিচে দুইটা জমে রয়েছে কিন্তু তাদের কোন কৃষি জমি নেই তাদেরকে ভূমিহীন বলা হয়ে থাকে। এই সকল ভূমিহীন পরিবারের মধ্যে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সরকারি কর্মকর্তারা কৃষি জমিগুলো বিতরণ করে থাকেন। অফিসে জমিগুলো লেজ নেওয়ার জন্য 5 টাকা কোড ফ্রি দিয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করতে হয়।

আবেদনের সাথে অবশ্যই একটি অঙ্গীকারনামা প্রদান করতে হয় যে এই জমি অর্থাৎ লিজ নেওয়া জমি যে কাজের জন্য লিজ নিচ্ছেন শুধুমাত্র সেই কাজেই ব্যবহার করিবেন এরকম অঙ্গীকার ব্যক্ত করে অঙ্গীকার নেওয়া তার সঙ্গে সংযুক্ত করতে হয়। এভাবে অঙ্গীকারনামা সহ অন্যান্য কাগজপত্রাদি সংযুক্ত করে জেলা প্রশাসক বরাবর ও কৃষি জমি লিজ নেওয়ার জন্য আবেদন করতে হয়। এই আবেদন পত্রটি জেলা প্রশাসক আবার উপজেলা ভূমি অফিস বরাবর প্রেরণ করে থাকেন যাচাই-বাছাই করার জন্য।

উপজেলা ভূমি অফিস সেই আবেদন পত্রটি বিভিন্ন দিক থেকে খতিয়ে দেখে সে অনুযায়ী রিপোর্ট প্রদান করেন জেলা প্রশাসকের কাছে। তারপর জেলা প্রশাসক সেই রিপোর্ট দেখে পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে থাকেন। এভাবে সম্পূর্ণ রিপোর্ট যদি সন্তোষজনক হয় তাহলে অবশ্যই সে জমিগুলো অর্থাৎ অকৃষি জমিগুলো জেলা প্রশাসক লিজ প্রদান করতে পারেন। তাহলে আমরা দেখলাম যে ক্ষারের জমি লিজ নেওয়ার যে নিয়মগুলি রয়েছে এই নিয়ম গুলি সম্পূর্ণভাবে পালন করলে অবশ্যই খাস জমি আমরা যে কোন বাংলাদেশের স্থায়ী নাগরিক বন্দোবস্তী পেতে পারে।

তবে এ সকল লিজ বা বন্দোবস্তে পাওয়ার জন্য ব্যক্তিকে যথেষ্ট কারণ প্রদর্শন করতে হবে। এই ঘর জমি সমূহ প্লিজ বা বন্দোবস্তি নেওয়া যায় কিন্তু এই জমিগুলো নিজের নামে রেকর্ড বা বিক্রি করা যায় না। অর্থাৎ এ জমিগুলো শুধুমাত্র নির্দিষ্ট সময়ের জন্য আমরা সরকারের কাছ থেকে ভোট দখলের জন্য বন্দোবস্তি পেতে পারি। তাই কখনোই এই সম্পত্তিগুলো ক্রয়-বিক্রয় করা সম্ভব নয়।

এ সকল বিষয়গুলি জানার জন্য আপনারা আমাদের ওয়েবসাইট টি ভিজিট করতে পারেন। কারন আমরা আমাদের ওয়েবসাইটটিতে এ ধরনের সকল তথ্য প্রকাশ করে থাকি। জমিজমা সংক্রান্ত অন্যান্য বিষয়গুলিও যদি আপনারা জানতে চান তাহলে আপনারা অবশ্যই আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করে আমাদের পাশে থাকবেন। তাহলে আপনারা জমিজমা সংক্রান্ত সহ অন্যান্য যে বিষয়গুলি রয়েছে সে বিষয়গুলি সম্পর্কে ধারণা পাবেন এবং বিস্তারিত তথ্য পাবেন।