জমি ক্রয় করার নিয়ম

পয়সা থাকলে যে জমি কেনা যায় তা কখনোই হতে পারে না। কারণ জমি ক্রয় করতে হলে আমাদেরকে অবশ্যই বিভিন্ন জিনিস ভেবেচিন্তে দেখে নিতে হবে। কারণ টাকা পয়সা দিয়ে কখনোই ঝামেলা বা অশান্তি ক্রয় করা যাবে না। আমরা যদি টাকা পয়সা দিয়ে ঝামেলাযুক্ত জমি কেনে প্রতারণার শিকার হয় তাহলে অনেক সময় দেখা গেছে যে ক্রেতার জীবনটাই ধুলিস্যাৎ হয়ে যায়।

কারণ আমরা জানি যে জীবনে টাকা পয়সা কারোর কাছে কিছুই নয় আবার অনেকের কাছেই টাকা পয়সাই সব। কারণ হলো টাকা পয়সায় মানুষ সবচেয়ে বেশি ভালোবাসে। এই কারণে আমাদের অবশ্যই সতর্কতার সহিত বিভিন্ন জিনিস দেখে শুনে একটি জমি ক্রয় করতে হয়। প্রথমে আগে রেখে দিতে হবে যে মালিকের কাছ থেকে আমরা জমি ক্রয় করব সেই জমিটির সেই মালিকের কিনা।

বিভিন্ন ধরনের দলিল দশটা বেজ দেখে শুনে পরীক্ষা করে দেখে নিতে হবে আসলেই সেই বিক্রেতায় জমির মালিক। জমির মালিক নিশ্চিত হওয়ার পর বাকি ভাবল দেখে নিতে হবে। তারপর সেই দাগ নম্বর ধরে পার্শ্ববর্তী ভূমি মালিকগণের সহিত কথাবার্তা বলে আমাদেরকে আরো নিশ্চিত হতে হবে যে জমিটি ঠিক রয়েছে কিনা। আমাদের এ কথা স্মরণ রাখতে হবে যে দশ ধরনের জমি কখনো ক্রয় করা যাবে না।

এই দশ ধরনের জমির মধ্যে সর্বাগ্রে হলো খাস জমি। কারণ হলো খাস জমি সরকারের নিজস্ব জমি এ জমি কেউ ক্রয় বিক্রয় করতে পারেনা। এরপর দেখবেন সম্পত্তি টি অর্পিত সম্পত্তি কিনা। অনেক হিন্দু নাগরিক অর্থাৎ বাংলাদেশের হিন্দু জনগণ অনেক সময় নিজের জমি জমা ফেলে রেখে দেশ ত্যাগ করেছে। তাদের এই সকল ভূমি গুলি অর্পিত সম্পত্তি নামে পরিচিত বা সরকারি রেকর্ডে রয়েছে।

এই সকল জমি সরকার ছাড়া অন্য কেউ হস্তান্তর করতে পারবেনা কোন ব্যক্তি মালিকের কাছে। এজন্য জমি ক্রয় করার পূর্বে আপনাকে অবশ্যই দেখে নিতে হবে এটি অর্পিত সম্পত্তি কিনা। অধিগ্রহণকৃত জমি কখনো কিনবেন না। রাষ্ট্র বা সরকার কোন ধরনের উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড করার জন্য দেশের যেকোনো অঞ্চলের যে কোন জমি অধিক গ্রহণ করতে পারে। আর এই সকল অধিগ্রহণকৃত জমি কখনই ক্রয় বিক্রয় হয় না।

আবার আমাদেরকে দেখে নিতে হবে যাতায়াতের রাস্তা রয়েছে কিনা। যাতায়াতের রাস্তা নাই এ রূপচমিও আমাদেরকে কখনোই ক্রয় করার সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত নয়। আমরা দেখেছি যে কোন জমিতে যাতায়াত না করতে পেরে সেই জমি ছেড়ে দিয়ে চলে যেতে হয়েছে অনেক মানুষকেই। এ কারণে আপনারা অবশ্যই খেয়াল করবেন যে যে সকল জমি যাতায়াতের রাস্তা নেই সে সকল জমি কেনার জন্য আগ্রহ দেখাবেন না। এরপর দেখবেন যে ইতিমধ্যে অন্য ব্যক্তির কাছে বিক্রয়ের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। সে সকল জমেও আপনি কখনো ভুলেও ক্রয় করবেন না।

কারণ যে ব্যক্তি আগে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে জমিটি ক্রয় করার জন্য জমিটি সেই কিনতে পারবে। এই কারণে এ সকল জমি ভুলেও ক্রয় করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন না। এরপর রয়েছে বিভিন্ন ঋণদান সংস্থা থেকে বন্ধ কি প্রাপ্ত জমিগুলো ক্রয় করা যাবে না। কারণ সে সকল জমির দলিলের ওপর বন্ধকী রয়েছে। তাই বন্ধ কি টাকা পরিশোধ না করলে ওই জমি বিক্রি করতে পারে না বিক্রয় করতে বা জমির মালিক। এ সকল কিছু দেখে দলিল ভালোভাবে যাচাই করে আমাদেরকে জমি ক্রয় করতে হবে। সবকিছুই ঠিকঠাক হয়ে গেলে বিক্রিয়ক এর সঙ্গে দলিল তৈরি করে সেই দলিল উপজেলা ভূমি অফিস সাব-রেজিস্ট্রি কর্তৃক রেজিস্ট্রি করে নিতে হবে।

রেজিস্ট্রি করা হয়ে গেলে অবশ্যই আমাদের মূল দলিল সংগ্রহ করে নিতে হবে। যদি সেটি সম্ভব না হয় তাহলে সাব রেজিস্ট্রি করতে সার্টিফাইড কপি গ্রহণ করতে হবে। এরপর উপজেলার সহ কমিশনার ভূমি এর কাছ থেকে নামদারের জন্য নির্ধারিত ফরম সংগ্রহ করে জমিটি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বা দ্রুত তার সহিত নাম জারি করে নিতে হবে।