আমরা আমাদের জীবনে কখনো না কখনো অবশ্যই জমি ক্রয় বিক্রয় করে থাকি। জমি ক্রয় করার পূর্বে আমাদেরকে অবশ্যই কিছু জিনিস সম্পর্কে ভালোভাবে অবগত হতে হবে। যদি সেই সকল জিনিস বা কাগজপত্রাদি সম্পর্কে আমরা ভালোভাবে অবগত না হই তাহলে অবশ্যই জমি ক্রয় করার পর আমাদেরকে মহাবিপদে পড়তে হবে।
তাই এ সকল মহা বিপদ যাতে পড়তে না হয় সেজন্য আমাদেরকে অবশ্যই জমির বিভিন্ন কাগজপত্র রয়েছে সেই কাগজপত্র সম্পর্কে পূর্বেই অবগত হতে হবে। তাই আমাদেরকে অবশ্যই জমি কেনার আগে কিছু বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে। বিশেষ করে আমাদের খুব ভালো করে দেখতে হবে সেটি হচ্ছে জমির মালিকানার বিষয়টি। আমরা যাদের কাছ থেকে জমি ক্রয় করব তাদের কাগজপত্র দেখে ঠিক করে নিতে হবে যে আসলে তারাই মালিক কিনা।
বা আর অন্য কেউ মালিক রয়েছে কিনা সেই জমির। এসব বিষয়ে জমি কেনার পূর্বেই আমাদেরকে নিশ্চিত হতে হবে। তবে মালিকানার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন্য আমাদেরকে দলিল খতিয়ান এ সকল বিষয়ে অর্থাৎ জমির কাগজপত্র দেখে নিশ্চিত হতে হবে জমির মালিক সম্পর্কে। এছাড়া জমি কিনে প্রতারিত হতে হবে।
কোনমতেই দলিল পত্র যাচাই-বাছাই না করে বিচার-বিশ্লেষণ না করে জমি ক্রয় করা উচিত নয়। শুধুমাত্র মানুষের কথায় যদি আমরা বিশ্বাস করে জমি ক্রয় করি তাহলে জমি ক্রয় করার পর অবশ্যই প্রতারিত হতে হবে। জমি কেনার পূর্বে যে সকল কাগজপত্র বাজে সব বিষয়ে আমাদেরকে সতর্ক হতে হবে সে বিষয়গুলি এখন আপনাদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করছি। আপনারা সেগুলি মনোযোগ সহকারে দেখতে থাকেন।
প্রথমে আমাদের দেখে নিতে হবে যে জরিপের মাধ্যমে প্রণীত রেকর্ড খতিয়ান এবং নকশা গুলি।
তারপর খেয়াল করতে হবে জমির তফসিল অর্থাৎ জমির মৌজা খতিয়ান নম্বর দাগ নম্বর উত্তর দাগের মোট জমির পরিমাণ কত রয়েছে সেগুলি কেউ অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে। এছাড়া জমির কাগজপত্র ঠিক থাকলেও হয়তো বেশি জমি বিক্রি করে ফেললে তখন আমরা প্রতারিত হতে পারি।
বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে সিএস, আর এস পর্চা দেখা যেতে পারে।
তাহলে অনেক জিনিস আমরা নিশ্চিত হতে পারি। বিক্রেতা ক্রয় সূত্রে ভূমির মালিক হয়ে থাকলে তার প্রায় দলিল বা দলিল রেকর্ডের সঙ্গে মিল করে বিক্রেতার মালিকানা নিশ্চিত হতে হবে।বিক্রেতা যদি পৈতৃক সূত্রে বা উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত হলে সর্বশেষ জরিপের খতিয়ান বিক্রেতা বা যিনি যার মাধ্যমে প্রাপ্ত তার নামের অস্তিত্ব আমাদের মিলিয়ে দেখতে হবে।জরিপ চলমান এলাকায় বিক্রেতার কাছে রক্ষিত মাঠ পর্চা আমাদেরকে অবশ্যই যাচাই করে দেখতে হবে।
যদি উত্তরাধিকার সূত্র বা পৈতৃক সূত্রে জমি পেয়ে থাকে তাহলে বিক্রেতার শরীকদের সঙ্গে বা আর যে সকল ভাগীদার আছে তাদের সঙ্গে বিক্রেতার সম্পত্তির ভাগাভাগির বা বন্টন নামা রয়েছে কিনা সেই বন্টন আমায় দেখে নিতে হবে।আমাদের আরেকটি কাজ করতে হবে সেটি হলো বিক্রেতার কাছ থেকে সংগৃহীত দলিল খতিয়ান পর্চা ইত্যাদি যে সমস্ত কাগজপত্র নিয়েছি সেই কাগজপত্র গুলি ভূমি অফিসে গিয়ে
তলবকারী বা স্বত্বলিপি রেজিস্টার এর সঙ্গে মিলিয়ে দেখতে হবে যে বিষয়গুলি ঠিক রয়েছে কিনা।
এছাড়া আরও বিষয়গুলি দেখতে হবে যে যিনি জমি বিক্রেতা তার নামে জমি খারিজ বা নামজারি হয়েছে কিনা এ বিষয়টি আমাদের দেখে নিতে হবে। এ সকল জিনিসগুলি যদি আমরা জমি কেনার পূর্বেই দেখে নেই তাহলে আমাদের জমি কেনার পর প্রতারণা হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম রয়েছে।
তারপর জমি ক্রয় করার পর আমাদেরকে অবশ্যই জমির রেজিস্ট্রি হয়ে যাওয়ার পর দেখে নিতে হবে বা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব জমির নাম জারি করে নিজের নামে করে ফেলতে হবে। এবং জমির সীমানা ঠিক রেখে তুমি নিজের দখলে নিতে হবে। তাহলে দেখা যাচ্ছে যে জমি ক্রয় করার পর এই সকল বিষয়গুলি ঠিকঠাক মত দেখে নিলে আর প্রতারণার শিকার হতে হবে না।