জমি ক্রয় করার পরে যেমন বিক্রয় এর কাছ থেকে আমাদের দলিল রেজিস্ট্রি করে নিতে হয় তবেই জমির মালিকানার প্রথম ধাপ সম্পন্ন হয়। কিন্তু দলিল রেজিস্ট্রি করার পর সেই মল দলিল যদি সঙ্গে সঙ্গে না পাই তাহলে অবশ্যই সার্টিফাইড কপি অর্থাৎ দলিলের সার্টিফাইড কপি নিয়ে আমাদেরকে যত দ্রুত সম্ভব পারা যায় জমি খারিজের বিষয়টি করে ফেলতে হয়।
তা না হলে জমি যতই নিজের দখলে থাকুক না কেন পরবর্তীতে পরবর্তী প্রজন্মের কাছে এই জমি মূল্যহীন হয়ে যেতে পারে। তাই ক্রয় সূত্রেই হোক বা পৈতৃক সূত্রে বা উত্তরাধিকার সূত্রেই পাওয়া যাক না কেন জমি যখন নিজের হস্তগত হয় তখন অবশ্যই সেই জমির নাম জারি সম্পন্ন করতে হয়। আর এই নামজারি সম্পন্ন করা হলেই জমি নিজের হয় বলে মনে করা হচ্ছে।
এই নামজারি ছাড়া অর্থাৎ খারিজ করা ছাড়া জমি নিজের বলে দাবি করলেও সম্পূর্ণ মালিকানা আসতে পারে না। কারণ জমি খারিজ না হলে আসল মালিক আবার দেখা যাচ্ছে যে তার যে জমি রয়েছে তার চাইতে বেশি পরিমাণ জমি বিক্রি করে দিতে পারে। বা এই জমি যেহেতু তার নামে এখনো রয়েছেন এই কারণে সে এই জমি দ্বিতীয়বার বিক্রয় করতে পারে।
তাহলে অবশ্যই মামলা-মোকদ্দমার মধ্যে পড়ে যেতে হতে পারে এই জমি ক্রয় বাবদ বিষয়টি নিয়ে। তাই আপনার অর্জিত সম্পত্তি অবশ্যই নামজারি করতে হবে। শুধুমাত্র কোন দলিলের মাধ্যমে কোন মানুষ অর্জিত সম্পত্তির বা ওয়ারিশ হিসেবে বাবা মায়ের কাছ থেকে পাওয়া জমির দখল থাকলেই উক্ত জমির মালিকানা নিশ্চিত হওয়া যায় না। কারণ কোন ভূমিতে বৈধ ওয়ারিশ বা প্রায় সূত্রের মালিক হবার পূর্বে মালিকের নাম থেকে অর্থাৎ পূর্বের মালিকের নাম কেটে বর্তমান আপনার নাম বসাতে হবে।
আর এই কাজটি করতে হয় জমি খারিজ বা নামজারির মাধ্যমে। এবং এই নামজারির ফলেই জমির মালিক হওয়া সম্ভব। আপনি যদি ওয়ারিশ হিসেবে বাঘ ক্রয় সূত্রে কোন জমির মালিক হন কিন্তু নাম জানি না করান তবে আপনার অজান্তে কোন ভাবে এক বা একাধিক দলিল সম্পাদন করে কোন স্বার্থান্বেষী মহল বা ব্যক্তি আপনার আগে নাম জারি করে ফেলতে পারে।
আর তাতে আপনি পরবর্তীতে নামজারি করতে গেলে স্বাভাবিকভাবেই মহা সমস্যায় পড়বেন। এই কারণে বাস্তব ক্ষেত্রে জটিলতা কমানোর জন্য আমাদেরকে অবশ্যই জমি কেনার সাথে সাথে অথবা উত্তরাধিকার সূত্রে জমি পাওয়ার সাথে সাথে আমাদের সেই জমির মালিকানা চেঞ্জ বা নামজারি করতে হবে। আর যদি জমি খারিজ করা না হয় তাহলে আমাদেরকে যে কোন সময় বিপদে পড়তে হতে পারে। অর্থাৎ অন্য যে কেউ যেকোনো দলিলের মাধ্যমে জমিটি তার নামে খারিজ করে নিলে আমাদের অবশ্যই মানুষে সম্পর্ক খারাপ হতে পারে এছাড়া অর্থ এবং সময় দুইটি নষ্ট হতে পারে।
জমি রেজিস্ট্রেশন দপ্তরটি আইন মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটি অফিস। দেশের সকল প্রকার দলিল সম্পাদন রেজিস্ট্রিকরণ উক্ত অফিসের দপ্তরের কাজ। দলিল রেজিস্ট্রি করনের তের ক্ষেত্রে এখনো পর্যন্ত যিনি বিক্রেতা তিনি আহত
উক্ত জমির মালিক হিসেবে সরকারের রেকর্ডে অন্তর্ভুক্ত আছেন কিনা তার কোন রেকর্ড সাব রেজিস্টার এর দপ্তরে নেই। ফলে ভুলবশত একই জমির এক বা একাধিক দলিলের মাধ্যমে বিক্রয়ের ঘটনা ঘটে থাকে। অপরদিকে ভূমি অফিস গুলির ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীনে যার কাছে সরকারের কাছে রেকর্ড ভুক্ত মালিকদের নাম পূর্ববর্তী নামজারীকৃত মালিকদের নাম নথি সহ বিস্তার তথ্য থাকে।
এর ফলে একবার নামধারী করাতে সক্ষম হলে একই জমির একাধিকবার বিক্রয় হলেও মূল মালিকের কাছে বা মূল মালিকের আর কোন ক্ষতিগ্রস্ত না হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি থাকে। নামজারি আবেদনের মাধ্যমে আবেদনকারী যে স্বত্বলিপি অর্জন করেন যাকে প্রচলিত ভাষায় খতিয়ান বলে থাকি। এই স্বত্বলিপির মাধ্যমেই তারা উক্ত জমিতে মালিকানা স্বত্ব প্রমাণে নিশ্চয়তা লাভ করেন
যা অন্য কোন দালিলিক মাধ্যমে লাভ করা যায় না। নামজারি করা না থাকলে যে শুধু একাধিক বিক্রয়ের আশঙ্কায় থাকে তা নয়, পরবর্তীতে আপনার অর্জিত সম্পত্তিতে দখলে থাকলেও আপনার অবর্তমানে আপনার উত্তরাধিকারগন উক্ত সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হবারও আশঙ্কা থাকে।