মৌজা কথার অর্থ কি | মৌজা মানে কি | মৌজা শব্দের অর্থ কি

মজা কথাটি মুঘল আমল থেকে আমাদের বাংলাদেশে বা এই অঞ্চলে প্রতিষ্ঠিত রয়েছে। তাহলে বলা যায় প্রাচীনকাল থেকে চলে আসছে মৌজা শব্দটি আমাদের বাংলা ভাষাতে। মুঘল আমলে ভূমি কে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অঞ্চলে বিভক্ত করত। আমি কে খুজবো ক্ষুদ্র অঞ্চলে বিভক্ত করত তাদের রাজস্ব আদায়ের সুবিধার্থে। অর্থাৎ ভূমিকার বা খাজনা অনেক পুরাতন রাজস্ব আদায়ের পদ্ধতি।

একটা সময় বা রাজ রাজাদের সময়ে জনগণের কাছ থেকে বা তখনকার রাজ্যের প্রজাদের কাছ থেকে খাজনা আদায় করত। খাজনা আদায় করা হতো কৃষকেরা যে ভূমি চাষাবাদ করতো তার উপর ভিত্তে করে। অর্থাৎ তখনকার সময়ে ভূমির করার বা খাস নাই ছিল রাজাদের রাজস্ব আয়ের একমাত্র এবং প্রধান রাজস্ব আয়। তাই তারা তাদের রাজস্ব আদায়ের থাকতে ভূমি অঞ্চলকে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অঞ্চলে বিভক্ত করে সেই ক্ষুদ্র অঞ্চলের নামকরণ করেছিল মৌজা। তাই দেখা যায় যে মৌজা কথাটি তখন থেকেই আমাদের এলাকায় প্রচলিত রয়েছে।

এবং বর্তমানেও সেই ভূমি অঞ্চলের ক্ষুদ্র অংশকে মৌজা বলেই চিহ্নিত করা হয়। একটি জমির বা ভূমি অঞ্চলের বা জমির যে পরিচয় রয়েছে তা এই ক্ষুদ্র অঞ্চল থেকেই সেটি পাওয়া যায়। একটি জমির উপর বা একটি মৌজাতে কত লোক স্থাপন করেছে এবং কি কি স্থাপনা রয়েছে সে সকল হিসেব নিকাশ করা হয়ে থাকে। এবং এই হিসাব নিকাশ করাটাও হয় সরকারের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যে।

সরকারের খাতায় সকল হিসেব নিকাশ ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ভাবে করা হয়েছে। কোন মজা বা ভূমি অঞ্চলের কোথায় কতটি স্থাপনা কত লোক এর বাস এবং তারা কি কার্য করে শেষ হবে হিসাব নিকাশ সরকার রাখে। এবং সরকারকে রাখতে হয় এই কারণে যে প্রতিটি এলাকা থেকে কর আদায় করতে হয়। একটি দেশকে পরিচালনা করার জন্য প্রচুর অর্থ প্রয়োজন হয়। এবং সেই সকল অর্থ সরকারকে জনগণের কাছ থেকে আদায় করতে হয়। কারণ সরকার তো আর আয় করে না।

সরকারের আইন হল জনগণের কাছ থেকে কর আদায় করা। এবং শেখর আবার জনগণের কল্যাণের জন্যই বিভিন্নভাবে সুষম বন্টন করে থাকেন। কোন কোন জায়গা থেকে কর আদায় করে সেগুলিকে আবার কিছু কিছু সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে জনগণের কাছে ফিরিয়ে দিতে হয়। যেমন একটি হাসপাতালে সম্পূর্ণ বিষয়েই সরকারের সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। সেখানে চিকিৎসক থেকে শুরু করে নার্স বা অন্যান্য আসবাবপত্র যন্ত্রপাতি সকল কিছুই সরকারকে ক্রয় করে সেই প্রতিষ্ঠান চালাতে হয়।

এবং ডাক্তার নার্স বা অন্যান্য যে সকল কর্মচারী রয়েছে তাদেরকে বেতন ভাতাতেই পরিশোধ করতে হয়। এছাড়া ওষুধ পত্র বা অন্যান্য আরো খরচ রয়েছে। সরকার এসব খরচপত্র করে অন্যান্য জায়গা থেকে কর আদায় করে। যেমন একজন ব্যক্তির আয় যদি আড়াই লক্ষ টাকা উপরে হয় অর্থাৎ বার্ষিক আড়াই লক্ষ টাকার উপরে তার বেতন ভাতা বা আয় হয় তাহলে তাকে সরকারকে আড়াই লক্ষ টাকার ওপর যে আয় হয় তার ওপর করবা ইনকাম ট্যাক্স দিতে হয়।

এছাড়া অন্যান্য সকল ক্ষেত্রেই কর রয়েছে। এ সকল কর আদায় করে সরকার আবার বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যায় করে থাকেন। যেমন রাস্তাঘাট স্কুল কলেজ এছাড়াও বিভিন্ন যে প্রতিষ্ঠান এর অবকাঠামো উন্নয়ন বা রাজকর্মচারীর প্রত্যেককে বেতন প্রদান ইত্যাদি এসব থেকেই হয়ে থাকে। তাই দেখা যায় সরকারকে পরিচালনা করার জন্য যে ব্যয় ভার বহন করে সেটি জনগণ এর কাছ থেকে সরকারকে ঘর হিসেবে আদায় করতে হয় এবং সেটিকে আবার জনগণের কাছে বিভিন্নভাবে ফিরিয়ে দিতে হয়।

তাই প্রাথমিকভাবে ভূমিকম্প দেওয়ার জন্য বা ভূমিকর আদায় করার জন্য এবং ভূমির সুষ্ঠু হিসাব-নিকাশ রাখার জন্য সরকারকে ক্ষুদ্র অঞ্চলে বিভক্ত করতে হয়েছে। সেই ক্ষুদ্র অঞ্চলের নাম মৌজা। আরো ভালো করে বললে বলতে হয় যে মৌজা হচ্ছে রাজস্ব আদায়ের সর্বনিম্ন একক-এলাকা। মুঘল আমলে কোন পরগনা বা রাজস্ব-জেলার রাজস্ব আদায়ের একক হিসেবে শব্দটি ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হতো। একগুচ্ছ মৌজা নিয়ে গঠিত হতো একটি পরগনা । বিংশ শতাব্দীতে মৌজা শব্দটি ব্যবহূত হয় সামাজিক একক গ্রামের বিকল্প নাম হিসেবে এবং এই নামটি বেশ জনপ্রিয়তাও লাভ করে।