খতিয়ান কাকে বলে? খতিয়ান সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন

আমাদের জীবনে কত কিছুরই না হিসাব রাখতে হয়। সকল কিছুর হিসাব রাখার জন্য অবশ্যই কোন না কোন পদ্ধতি রয়েছে। তাই জমে জমার হিসাব রাখার জন্য অবশ্যই খতিয়ান ব্যবহৃত হয়। খতিয়ানে লেখা থাকে জমির মালিকানার নাম তার পূর্ণ ঠিকানা পিতা বা স্বামীর নাম সহ জমির পরিমাণ বা আরো যদি দাগ নম্বর থাকে সেই সকল বিষয়ে এখানে পূর্ণাঙ্গ তথ্য দেওয়া থাকে। তাই আমরা প্রাথমিকভাবে বলতে পারি যে খতিয়ান হলো একটি জমির ঠিকানা।

বা ঠিকানা সংবলিত একটি কাগজ। তবে আমরা বলতে পারি যে খতিয়ান হলো ইংরেজি Ledger শব্দের আভিধানিক অর্থ। আর এই Ledger শব্দের আভিধানিক অর্থ হলো তাক বা সেলফ। বাষ গৃহে প্রয়োজনীয় সামগ্রী যেমন তাকে সাজিয়ে রাখা হয় তেমনি ভাবে ব্যবসায়ের লেনদেনের হিসাব পত্র গুলি খাতায় লিপিবদ্ধ করা হয়ে থাকে। অর্থাৎ লেনদেনের হিসাবের সেই খাতাটাই হলো হিসাবের জন্য সেলফ বা তাক।

কিন্তু আমরা খতিয়ান শব্দটি জমিজমার বিষয়ে ব্যবহার করে থাকি। এবং এখানেও আসলে জমি জমার হিসাব সম্মিলিত পত্রই হলো খতিয়ান। জমিজমার সকল হিসাবগুলি একটি পাতায় রক্ষিত থাকে ভূমি অফিসের সেটিই হল আসলে খতিয়ান। তাহলে আমরা খতিয়ান শব্দটি যেখানে যেভাবে যাই না কেন আসলে খতিয়ান শব্দটির অর্থ সেই একই হিসাব দেখা যাচ্ছে। হিসাববিজ্ঞান কার্যক্রমের জন্য দুইটি হিসাবের বই থাকে বা দুই ধরনের বই ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

একটি হলো প্রাথমিক বই বা একে জাবেদা বলা হয় অন্যটি হলো অফিসার হিসেবের পাকা বই। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে লেনদেন সংঘটিত হওয়ার পর প্রথমে দ্বৈত সত্তা বিশ্লেষণ করে দ্রুত দাখিল পদ্ধতি অনুযায়ী ডেভিড ও ক্রেডিট নির্ণয় করা হয়ে থাকে। তাই এ সকল হিসাব-নিকাশ করে লিপিবদ্ধ করার জন্য আমরা অবশ্যই অনেক মোটা বই ব্যবহার করে থাকি। আর হিসাববিজ্ঞানে এ সকল লেনদেনের হিসাবকেই খতিয়ান বলা হয়ে থাকে। এই খতিয়ানে এটুকুন বোঝা যায় যে ব্যবসায়ের লেনদেনের অবস্থা কিরূপ।

অর্থাৎ প্রতিষ্ঠানের দেনা পাওনা যেটি রয়েছে একেবারে সংক্ষেপে সেটি উত্থাপন হয়ে থাকে এই খতিয়ান এর মাধ্যমে। তাই এক্ষেত্রেও খতিয়ান একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই আমরা দুই জায়গাতেই খতিয়ানের বিষয়টি আসলে একই রকম দেখতে পাই। জমিজমা সংক্রান্ত বিষয়ে যে খতিয়ান সেটিও মোট জমির হিসাব নিকাশ একটি দুটি পাতাতেই লিপিবদ্ধ থাকার কারণে সকল কিছু আমরা এখান থেকে দেখে নিতে পারি।
তাই আমরা বলতে পারি যে জমির ক্ষেত্রে খতিয়ান অর্থ হল হিসাব।

মূলত জমির মালিকানা সত্যরক্ষা ও রাজস্ব আদায়ের জন্য জরিপ বিভাগ কর্তৃক প্রতিটি মজার জমির এক বা একাধিক মালিকের নাম পিতা বা স্বামীর নাম ঠিকানা দাগ নম্বর ভূমির পরিমাণ হিসাব খাজনা ইত্যাদি বিবরণ সহজে ভূমি সত্য প্রস্তুত করা হয় তাকেই খতিয়ান বলা হয়ে থাকে। বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে খতিয়ান সাধারণত চার ধরনের খতিয়ান থেকে থাকে। এই খতিয়ানগুলির নাম হলো সি এস খতিয়ান, এস এ খতিয়ান, আর এস খতিয়ান এবং বিএস খতিয়ান। তাহলে আমরা ভালোভাবে লক্ষ্য করলে দেখতে পাই যে খতিয়ান দুই হিসেবেই হিসাবের ক্ষেত্র।

ব্যবসার ক্ষেত্রে দেখলাম খতিয়ান এমন একটি জিনিস যা ব্যবসার জন্য এটি অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই একটি কাগজের বা একটি পাতার উপর চোখ বুলালে ই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের স্বরূপ সম্পর্কে জানা যায় বা লেনদেনের হিসাব সম্পর্কে জানা যায়। তেমনি ভাবে আবার জমি জমার খতিয়ানের সেই এক পৃষ্ঠার কাগজের দিকে তাকালে আমরা জমিজমা সংক্রান্ত সকল বিষয়গুলি এখানে দেখে নিতে পারি। তাই যাইহোক দেখা যায় যে খতিয়ান হলো উভয় ক্ষেত্রে অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। জমিদার ক্ষেত্রে খতিয়ান নিজের কাছে না থাকলে আপনি বুঝতেই পারবেন না আপনার জমিজমা সম্পর্কে। কি অবস্থায় রয়েছে আপনার জমি জমার বিষয় সম্পত্তি গুলি। তবে এখন আপনারা অবশ্যই অনলাইনের মাধ্যমে আপনার জমির দাগ নম্বর অথবা মালিকানা ইত্যাদি প্রয়োগ করে দেখে নিতে পারবেন আপনার খতিয়ান টি।