যেকোনো অফিস চলার জন্য অবশ্যই সেখানে বিভিন্ন ধরনের কর্মকর্তা এবং কর্মচারী থাকে। তাদের সমন্বয়ে একটি অফিস খুব ভালোভাবে চলতে পারে। যেকোনো অফিস ভালোভাবে চলার জন্য প্রত্যেকটি কর্মকর্তা-কর্মচারীর মধ্যে ভালোভাবে বোঝাপড়া থাকতে হবে। এবং প্রত্যেকটি অফিসের সকলেই যদি একটি অনুযায়ী কাজ করে তাহলে অবশ্যই সেই অফিসটি অত্যন্ত ভালোভাবে চলতে পারে বলে ধরে নেওয়া হয়। কিন্তু কোন অফিসে যদি একজন আরেকজনের সঙ্গে বোঝাপড়া থাকে না বা মেল মহব্বত থাকে না তখন সেই অফিসটি অবশ্যই ভালোভাবে চলতে পারে না।
কারণ প্রত্যেকটি কাজের জন্য একজন আরেকজনের উপর নির্ভরশীল হয়ে থাকে। প্রতিজন বা অপ্রতি কর্মকর্তা-কর্মচারী গান যদি তার নিজ নিজ পথ সমূহ বা পদের বিষয়ে ওয়াকিবহাল থাকে তাহলে অবশ্যই সেই অফিসটি ভালোভাবে চলার নজর দেখতে পাওয়া যায়। প্রত্যেকেই দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিলে অবশ্যই সেই অফিস ভালোভাবে চলবে। কিন্তু আমরা যদি দায়িত্বশীলতার পরিচয় না দিতে পারি তাহলে সে বিষয়টি কখনোই ভালো হয় না।
কারণ আমরা দেখেছি যে যে অফিসে সকল কর্মকর্তা কর্মচারীর মধ্যে বেশ ভালোভাবে বোঝাপড়া এবং প্রত্যেক কর্মকর্তা কর্মচারীগণ নিজের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে ভালোভাবে থাকে সেই অফিসটি খুব ভালো মতন চলতে পারে। এদিক থেকে আমাদের বাংলাদেশের যেকোনো বেসরকারি অফিসগুলোর দিকে দেখলে আমরা দেখতে পাই যে তাদের আন্তরিকতার বিষয়টি। কিন্তু আমাদের সরকারি অফিসগুলোতে গেলে সে ধরনের আন্তরিকতার বিষয়টা খুব একটা চোখে পড়ে বলে মনে হয় না। এখানে সবাই একেক জন একেক রকম কর্মকর্তা বলে মনে করা হয়।
এবং নিজের দায়িত্ব কর্তব্য সম্পর্কে মনে হয় না এরা ওয়াকিবহাল রয়েছে। তবে বর্তমান সময়ে আগের সেই পদ্ধতি গুলো বাদ দিয়ে সকল অফিসগুলোই সে সরকারি হোক অথবা বেসরকারি হোক ঢেলে সাজানোর চেষ্টা করছেন। কারণ আমরা যখন একই দেশে বেসরকারি অফিসগুলোতে যে ধরনের সেবার বিষয়গুলি দেখে থাকি সরকারি অফিসে যখন এই সেবার মানটা অতটা ভালো হয় না তখন অবশ্যই মানুষের মধ্যে সমালোচনার বিষয়টি দেখতে পাওয়ার প্রেক্ষিতেই বর্তমান সরকার অনেকটা এ বিষয়গুলোকে নজর দিয়েছেন।
এবং বর্তমানে সরকারি অফিসগুলোতে গেলেও তারা সকল তথ্য প্রদান করতে দেখা যায়। এবং তারাও আন্তরিকতার সহিত সকল গ্রাহকের সঙ্গে কথা বলে বলে দেখা যায়। আজকে আমরা ইউনিয়ন বা উপজেলা ভূমি অফিসের পদবী সম্মোহ নিয়ে বিস্তারিত ধারণা দেবো আপনাদেরকে। প্রথমে উপজেলা ভূমি অফিসের পদবী সম্মোহ নিয়ে কথা বলা যাক। উপজেলা ভূমি অফিসের প্রধান কর্মকর্তা হলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি), বা ইনাকে এসিল্যান্ড বলেও চিহ্নিত করা হয়। ইসলাম হলেন বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারের একজন কর্মকর্তা। প্রকৃত পক্ষে তার পুরো পদবী হলো সহকারী কমিশিনার (ভূমি) বা Assistant Commissioner (Land)।
এরপর কানুনগো: কানুনগো একজন দ্বিতীয় শ্রেণীর রাজস্ব কর্মকর্তা। এই পদবীটি প্রাচীনকাল থেকে ভূমি অফিসে বাংলাদেশে শোনা যায়। এটি ফার্সি ভাষায় কানুনগো শব্দের অর্থ যিনি আইন বিষয়ে অভিজ্ঞ বা দক্ষ।
সার্ভেয়ার: সার্ভেয়ার একজন তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী। সার্ভেয়ার জমিজমার মাপচক বিষয়ে এবং তিনি জমির নকশা তৈরি করেন। কোন জমি নিয়ে সমস্যা হলে এসিল্যান্ড তাকে তদন্ত করতে নির্দেশ দেন।
নামজারি কর্মকর্তা: নামজারি এবং সহকারী নামজারি তারা তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী। এসিল্যান্ড অফিসের মিউটেশন কেস নথিভুক্ত করা বা ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকেন এই নামধারী বা সহকারী নামধারী কর্মকর্তারা।
নাজির: নাজির একজন ৩য় শ্রেণীর কর্মচারী। নাজির এসিল্যান্ড অফিসের রিপোর্ট রুমের দায়িত্বে থাকেন। তাকে নামধারির কেস মঞ্জুরের পর তিনি মিউটেশন পর্চা ও ডিসিআর সরবরাহ করে থাকেন।
চেইনম্যান: চেইনম্যান একজন ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারী। তিনি সাধারণত জমি মাপার কাজে সার্ভেয়ারকে সহায়তা করে থাকেন। এর পরের পথটি হলো
প্রসেস সার্ভার বা জারীকারক: প্রসেস সার্ভার বা জারি কারক হলেন একজন চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী। তিনি নামজারির কেস মিস কেস বা অন্য যেকোনো নোটিশ ও চিঠিপত্র জারি করার দায়িত্ব তার। এরকমভাবে মাঠ পর্যায়ের ভূমি অফিস হল ইউনিয়ন ভূমি অফিস। এখানেও উপজেলা ভূমি অফিসের মতন পদ পদবী রয়েছে। ইউনিয়ন ভূমি অফিসে কর্মরত ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা, উপ-সহকারী কর্মকর্তা, উপজেলা ভূমি অফিস ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে কর্মরত নামজারী সহকারী, সার্টিফিকেট সহকারী, অফিস সহকারী, সার্ভেয়ার, কানুনগোসহ সমপর্যায়ের কর্মকর্তা/কর্মচারী, রয়েছে।